ঋতুস্রাব মানে পিরিয়ড হল মাতৃত্বের সম্ভাবনার সূচক। মহিলাদের শরীরে প্রতি মাসে ঘটে যাওয়া এই প্রাকৃতিক ক্রিয়াটি একটি সূচক যে আপনি একজন মা হতে সক্ষম। যাইহোক, সমাজে পিরিয়ড নিয়ে ছড়িয়ে পড়া মিথ এবং বিভ্রান্তির কারণে, মাসিকের স্বাস্থ্যবিধি একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাসিকের সময় পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, এতে যেকোনো ধরনের অবহেলা আপনার জন্য সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৮ মে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য হলো '২০৩০ সালের মধ্যে মাসিককে জীবনের স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে গড়ে তুলুন'।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শৈশব থেকেই ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সঠিক তথ্য এবং এর সাথে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষকে জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বল পরিচ্ছন্নতার কারণে যৌনাঙ্গে চুলকানি, মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই) এবং গুরুতর ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এই সমস্ত সমস্যা এড়াতে, কিছু সাধারণ জিনিসের যত্ন নেওয়া আপনার পক্ষে সহায়ক হতে পারে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই এ বিষয়ে।
সময়ে মত প্যাড পরিবর্তন করুন
মাসিকের সময় শরীর থেকে নোংরা রক্ত বের হয়, যা স্যানিটারি ন্যাপকিন শোষণ করে। এই সময়ে, শরীর অনেক ধরনের সংক্রমণের জন্য খুব সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এমন অবস্থায় একই প্যাড দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে যৌনাঙ্গে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব সমস্যা এড়াতে সময়ে সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তন করুন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাসিকের সময় পরিচ্ছন্নতার যত্ন নিয়ে প্রতি ৩-৪ ঘণ্টা অন্তর প্যাড পরিবর্তন করুন।
যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতার প্রতি খেয়াল রাখুন
মাসিকের সময় যৌনাঙ্গের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, এটি করে আপনি সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারেন। স্যানিটারি ন্যাপকিন অপসারণের পরেও ব্যাকটেরিয়া শরীরে লেগে থাকতে পারে। বেশিরভাগ লোকেরা যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করার জন্য রাসায়নিকযুক্ত পণ্য ব্যবহার করে থাকে, যদিও বিশেষজ্ঞরা এটিকে সঠিক উপায় বলে মনে করেন না। প্রতিবার পানি দিয়ে যৌনাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
প্যাড পরিবর্তনের সময় বিশেষ যত্ন
প্রতিবার প্যাড ব্যবহার করার সময়, এটি সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করা অপরিহার্য। স্যানিটারি ন্যাপকিনটি সঠিকভাবে কাগজে মুড়ে ডাস্টবিনে রাখুন এবং তারপর হাত পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন খোলা জায়গায় নিক্ষেপ করলে জীবাণু ও রোগ ছড়াতে পারে। টয়লেটে ন্যাপকিন ফ্লাশ করবেন না।
নিয়মিত জল পান করুন
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাসিকের সময় আপনার পিএইচ লেভেলও বাড়তে পারে, এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সময়ে সময়ে পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পানি পান করা সংক্রমণের ঝুঁকিও কমাতে পারে, পাশাপাশি আপনাকে ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা করতে পারে।